২ এপ্রিল, ২০১৮

নামাজ আদায়ের খুঁটিনাটি নিয়মাবলী

Eqra Coaching     এপ্রিল ০২, ২০১৮     2 comments

নামাজ আদায়ের খুঁটিনাটি নিয়মাবলী



নামাজ আদায়ের খুঁটিনাটি নিয়মাবলী
আল্লাহর বিধান পালন করা তাদের দ্বারাই সম্ভব যার প্রতি রয়েছে আল্লাহ অসীম রহমত। তাঁর রহমত ব্যতিত কারো পক্ষে ইবাদাত-বন্দেগিসহ কোনো নেক আমল করাই সম্ভব নয়। ইবাদাতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইবাদত হচ্ছে নামাজ। যা ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ। নামাজের সানা, রুকু, সিজদা ও তাশাহহুদ নিয়ে ইতিপূর্বে আলাদা আলাদা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। যার লিংক এ লিখার শেষেও থাকবে। কিভাবে নামাজ পড়তে হয় তা তুলে ধরা হলো- 

নামাজ অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ ইবাদাত। তাই নামাজ সম্পর্কে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, ‘তোমরা সেভাবে নামায আদায় কর, যে ভাবে আমাকে নামায আদায় করতে দেখ।’ (বুখারি)

***নামাজ পড়িবার নিয়ম নিচে ক্রমানুসারে বর্ণনা করা হল।***

১. গোসল বা ওজু বা তায়াম্মুম করে পাক-পবিত্র হবেন।

২. সাংসারিক চিন্তা-ভাবনা ভুলে একমাত্র প্রতিপালক আল্লাহ দিকে মনোনিবেশ করে কেবলামুখী (পশ্চিমমুখী) হয়ে দাড়াবেন।

৩. নামাজের নিয়ত করিবেন (নিয়ত মূখে পড়া জরূরী নয়)

৪. আল্লাহ আকবার- বলে উভয় হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে কান স্পর্শ করে হাত বাঁধবেন। হাত বাঁধার জন্য বাম হাতের উপর ডান হাত রেখে, ডান হাতের কনিষ্ঠ ও বৃদ্ধাঙ্গুল দ্বারা বাম হাতের কব্‌জি ধরবেন এবং ডান হাতের বাকি তিনটি আঙ্গুল বাম হাতের উপর প্রসারিত থাকবে।

৫. এবার চুপে চুপে সানা (সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়াবিহাম-দিকা ওয়াতাবারাকাসমুকা ওয়াতা’আলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা) পাঠ করবেন।

৬. আউ’জু বিল্লাহি মিনাস শয়তানির রাযিম। বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম- পাঠ করিবেন। এরপর সূরা ফাতেহা পাঠ করবেন। সূরা ফাতেহাসহ নিচে কিছু ছোট সূরার অনুবাদ দেওয়া হয়েছে।

৭. এবার অন্য একটি সূরা পাঠ করবেন। তবে যদি ইমামের পিছনে নামাজ পরেন তাহলে চুপ করে থাকবেন।

৮. আল্লাহ আকবার বলে রুকুতে যাবেন। রুকুর সময় দু হাত হাঁটুর উপর এমনভাবে রাখবেন যেন গিরার উপর ভর পরে। মাথা, ঘাড় ও পিঠ এক বরাবর থাকবে। রুকুতে থাকা অবস্থায় তিন বার অথবা তার চেয়ে বেশি সংখ্যক বেজোর বার রুকুর তাসবীহ অর্থাৎ সূবাহানা রাব্বিয়াল আযীম- এই দোয়া পাঠ করবেন। রুকুর তাসবীহ পাঠ শেষে সোজা হয়ে দাড়াবেন।

৯. রুকুর তাসবীহ পাঠ শেষে সোজা হয়ে দাড়াবেন এবং সামি আল্লাহুলিমান হামিদা এবং রাব্বানা লাকাদ হামদ্‌- বলবেন। তবে ইমামের পিছনে নামাজ পড়লে ইমাম প্রথমে- সামি আল্লাহুলিমান হামিদা- বলবেন, এরপর আপনি শুধু -রাব্বানালাকাদ হামদ্‌- বলবেন।

১০. এবার আল্লাহ আকবার বলে সিজাদায় যাবেন। সিজদার সময় কপাল, নাক, দুই হাত, হাঁটু ও দুই পা মাটির স্থিরভাবে লেগে থাকবে। সিজদায় থাকা অবস্থায় তিন বার বা তার চেয়ে বেশি সংখ্যক বেজোর বার সিজদার তাসবীহ অর্থাৎ সূবাহানারাব্বিয়াল আলা- এই দোয়া পাঠ করবেন। এরপর সিজদা থেকে উঠে সোজা হয়ে বসবেন। এরপর আবার সিজদায় যাবেন এবং পূর্বের ন্যায় সিজদার তাসবীহ পাঠ করবেন। দ্বিতীয় সিজদা শেষ হলে সোজা হয়ে দাড়াবেন।

১১. এবার প্রথম রাকাতের নিয়মে সূরা ফাতেহা ও তার সাথে অন্য সূরা (ইমামের পিছনে হলে চুপ থাকবেন) পাঠ করবেন। এরপর রুকু ও সিজদা শেষ হলে বসুন এবং তাশাহুদ পাঠ করুন। এরপর নামাজ যদি দুই রাকাতের হয় তবে দরুদ ও দোয়া মাসুরা পাঠ করুন। আর নামাজ যদি তিন বা চার রাকাতের হয় তবে শুধু তাশাহুদ পাঠ শেষে উঠে দাড়ান এবং বাকি নামাজ শেষ করুন। এক্ষেত্রে সুন্নত নামাজ হলে বাকি রাকাতসমূহ পূর্বের ন্যায় শেষ করতে হবে। আর যদি ফরজ নামাজ হয় তাহলে শুধু সূরা ফাতেহা পাঠ করতে হবে অর্থাৎ বাকি রাকাতে সূরা ফাতেহার সাথে অন্য কোনো সূরা পাঠ করতে হবে না। শেষ রাকাতে সিজদা শেষে বসে যথাক্রমে তাশাহুদ, দরুদ ও দোয়া মাসুরা পাঠ করুন। তাশাহুদ, দরুদ ও দোয়া মাসুরা নিচে দেওয়া হয়েছে।

১২. শেষ রাকাতে দোয়া মাসুরা পাঠ শেষ হলে প্রথমে ডান দিকে মাথা ঘুরিয়ে সালাম ফিরান অর্থাৎ বলুন - আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। এরপর বাম দিকে মাথা ঘুরিয়ে বলুন - আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। এভাবে নামাজ শেষ করুন।


***সূরা ফাতেহা:
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। আররাহমানির রাহীম। মালিকি ইয়াও -মিদ্দীন। ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকানাছ্‌তাঈন। ইহ্‌দিনাচ্ছিরাতাল মুছ্‌তাক্বীম। সিরাতাল্লাযীনা আন’আমতা আলাইহিম। গাইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদ্বাল্লিন। (আমিন)

***সূরা ফীল:
আলাম তারা কাইফা ফায়ালা রাব্বুকা বি আসহাবিল ফিল। আলাম ইয়াজ আল কাইদাহুম ফি তাদলিলিও। ওয়া আরছালা আলাইমি ত্বাইরান আবাবিল। তারমিহিম বিহিজারাতিম মিন্‌সিজ্জিলিন। ফাজাআলাহুম কা’ছফিম্মাকুল।

***সূরা মাউন:
আরাআই তাল্লাজী ইউকাজ্জিবু বিদ্দিন। ফাজালি কাল্লাযী ইয়াদউল ইয়াতিম। ওয়ালা ইয়া হুদ্দু আলা-ত্বাআমিল মিছকিন। ফাওয়াই লুল্লিল মুছাল্লিনা। আল্লাযীনা হুম আনছালাতি হিম সাহুন। আল্লাযীনা হুম ইউরাউনা। ওয়া ইয়াম নাউনাল মাউন।

***সূরা কাওছার:
ইন্না আ’ত্বাইনা কাল কাওছার। ফাছল্লি লি রাব্বিকা ওয়ানহার। ইন্না শা-নিয়াকা হুওয়াল আবতার।

***সূরা ইখলাছ:
ক্কুলহু আল্লাহু আহাদ। আল্লাহু-চ্ছামাদ। লামইয়ালিদ। ওয়ালাম ইউলাদ। ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।

***সূরা ফালাক্ব:
ক্কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক্বি। মিনশাররি মা খালাক্বা। ওয়ামিন্‌শাররি গাছিক্বিন ইজা ওয়াক্বাব। ওয়া মিন্‌শার্‌রিন্না-ফাছাতি ফিল উকাদি। ওয়া মিন্‌শার্‌রি হাসিদিন ইজা হাসাদ।

***সূরা নাস:
ক্কুল আউজু বিরাব্বিন্নাস। মালিকিন্নাস। ইলা-হিন্নাস। মিন্‌শার্‌রিল ওয়াছ-ওয়াছিল খান্নাস। আল্লাযী ইউওয়াছবিছু ফিছুদুরিন্নাস। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্নাস।

***তাশাহুদ:
আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াচ্ছালা ওয়াতু ওয়াত্তাইয়্যিবাতু, আচ্ছালামু আলাইকা আয়্যুহান্নাবিই ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আচ্ছালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সলিহীন, আশহাদু আল্‌লা-ইলাহা ইল্লাল্‌লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু।

***দরুদ:
আল্লাহুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সল্লাইতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আ’লা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আ’লা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামিদুম মজিদ।

***দোয়া মাসূরা:
আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু নাফসী যুলমান কাছীরাওঁ ওয়ালা ইয়াগফিরুয যুনুবা ইল্লা আনতা, ফাগফিরলী মাগফিরাতাম মিন ইনদাকা ওয়ারহামনী ইন্নাকা আনতাল গাফুরুও রাহীম।


2
replies

পোষ্টের ধরন

আমাদের ফ্যান পেজ লাইক করুন

ইসলামিক রিসার্চ সমৃদ্ধ ফ্যান পেজ

বর্তমান পরিদর্শকের মোট সংখ্যা

Subscribe to Newsletter

We'll never share your Email address.
© 2018 Eqra Coaching. Eqra Designed by Eqra. Powered by Eqra.